অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী নিয়োগ ২০২৫
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ ২০২৫: দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য নিয়োগের শুরু হচ্ছে! রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার পদে নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে চলা অনিশ্চয়তা ও আইনি জট অবশেষে কাটল। সাম্প্রতিক কলকাতা হাইকোর্টের এক রায়ের ফলে প্রায় ১৭০০ শূন্যপদে তারাতারি কর্মী নিয়োগের পথ প্রশস্ত হলো। চাকরিপ্রার্থীরা আশাবাদী দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী নিয়োগ ২০২৫
দীর্ঘদিনের জটিলতা কীভাবে শুরু হয়?
পশ্চিমবঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি সুপারভাইজার পদে ১৯৯৮ সালে শেষবারের মতো নিয়োগ হয়েছিল। বিতর্কের মূল কারণ ছিল কেন্দ্রের ২০১৫ সালের নির্দেশিকা নিয়ে। এই নির্দেশিকাযটিতে বলা হয়েছিল যে, মোট শূন্যপদের ৫০% পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার মাত্র ৪২২টি পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত রেখে বাকি ৩০৩৬টি পদে সরাসরি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বহু অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আদালতের শরণাপন্ন হন।
এরপর দীর্ঘ ২১ বছর অতিবাহিত হলেও কোনো নিয়োগ হয়নি। আবার ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার ৩৪৫৮টি শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও তা নিয়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক।
নতুন পরিচয়পত্র ২০২৫, ভোটার কার্ড-আধারের দিন শেষ , এবার একটি কার্ড দিয়ে সব কাজ সম্পন্ন হবে।
কেন্দ্রর নির্দেশিকাকে অমান্য রাজ্য:
কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি নতুন নিয়ম জারি করে। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল যে, অঙ্গনওয়াড়ির সুপারভাইজার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% শূন্যপদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্য থেকে পূরণ করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার এই নিয়ম পরিবর্তন করে ৭৫% পদে সরাসরি নিয়োগের ব্যবস্থা করে। এই সিদ্ধান্তকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বৈষম্যমূলক বলে দাবি করেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে নিজের মতো নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে চাইছে।
আইনি লড়াই রায়ের বিবরণ:
কলকাতা হাই কোর্টে ২০১৯ সালে নিয়োগ নির্দেশিকা বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মাসে বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায় রায় দেন যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ৫০% পদ বরাদ্দ রাখতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার এই রায়ও মানেনি এবং সরাসরি নিয়োগ চালিয়ে যান। ফলে মামলাটি ২০২৪ সালে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার বেঞ্চে ওঠে।
মামলাকারীদের আইনজীবীরা আদালতে তুলে ধরেন যে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে ৫০% শূন্যপদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুযোগ দিতে হবে। এরপর বিচারপতি মান্থা তাঁর রায়ে জানান, বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের রায় বহাল থাকবে এবং তা অমান্য করা বেআইনি। এর পাশাপাশি আদালত একটি নির্দেশ দেয় যে, ৩৪৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ১৭২৯টি পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্য থেকে পূরণ করতেই হবে। অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী নিয়োগ ২০২৫.

নতুন আশার আলো: দ্রুত নিয়োগের সম্ভাবনা
আদালতে এই রায়ের ফলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো। চাকরিপ্রার্থীরা আশাবাদী যে, রাজ্য সরকার খুব তারাতারি এই নির্দেশ কার্যকর করবে এবং নিয়োগের জট কাটিয়ে ১৭০০ শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
এখন দেখার বিষয় যে, রাজ্য সরকার কত তারাতারি হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করে এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অধিকার রক্ষা করে। দীর্ঘ ২৬ বছর পর চাকরিপ্রার্থীরা এখন বাস্তবিক নিয়োগের আশায় দিন গুনছেন।
আরও পড়ুন, ভারতে চালু সরকারের গুরুত্বপূর্ন ৪ টি কার্ড, না করা থাকলে বিপদে পড়বেন!