ICDS Recruitment 2025: ১৭২৯ টি শুন্যপদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ শুরু! জানুন বিস্তারিত বিষয়সূচি।
ICDS Recruitment 2025:
হাই কোর্টের রায়ে স্বস্তি ফিরলো পশ্চিমবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীদের, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়োগ নিয়ে রাজ্যে একটি নতুন সুরাহা পাওয়া গেল। প্রায় ২৬ বছর ধরে চলছিলো ICDS সুপারভাইজার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা, অবশেষে সেটার অবসান ঘটলো।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ সম্প্রতি এক রায়ে জানিয়েছেন, রাজ্যে ৫০-৫০ অনুপাতে ICDS কর্মী নিয়োগ করা হবে অর্থাৎ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রায় ১৭০০ টি শূন্যপদে দ্রুত ICDS কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ICDS Recruitment 2025
Table of Contents
নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত শুরু:
খবর অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে রাজ্যে শেষবারের মতো ICDS সুপারভাইজার পদে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এর পর আবার দীর্ঘ ২১ বছর পর, ২০১৯ সালে ৩৪৫৮গুলি শূন্যপদে ICDS কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ২০১৫ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী, মোট শূন্যপদের ৫০% পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করার কথা থাকলেও রাজ্য সরকার এই নিয়মটিকে অমান্য করেন।
তবে, রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য মাত্র ৪২২টি শূন্যপদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল এবং বাকি ৩০৩৬টি পদে সরাসরি ICDS কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন।

কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা বনাম রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ:
২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করেন, আর সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা ছিল যে,ICDS সুপারভাইজার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% শূন্যপদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে এবং বাকি ৫০% পদ বাইরে থেকে সরাসরি নিয়োগ করা যাবে।
কিন্তু রাজ্য সরকার অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশকা অমান্য করে ৭৫% পদে সরাসরি আশা কর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেয়। তার জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা দাবি করেন, এই পদক্ষেপ তাঁদের প্রতি বৈষম্যমূলক। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্য সরকার নিজেদের স্বার্থে এই নিয়ম পরিবর্তন করেছেন। ICDS Recruitment 2025
আদালতের নির্দেশ ও আইনি পথে লড়াই:
২০১৯ সালের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলাকারীরা শেষমেষ কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। তার জবাব স্বরূপ ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ললিতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ অনুযায়ী, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৫০% শূন্যপদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতেই হবে।
কিন্তু রাজ্য সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়কে উপেক্ষা করে সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে, ২০২৪ সালে এই মামলাটি বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার বেঞ্চে ওঠায়। মামলাকারীদের আইনজীবীরা আদালতে তুলে ধরেন যে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী ৫০% শূন্যপদে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক। ICDS Recruitment 2025
বিচারপতি মান্থা তাঁর রায়ে জানান, বিচারপতি ললিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগের নির্দেশ বহাল রয়েছে এবং সেই নির্দেশ অমান্য করা রীতিমতো বেআইনি। তাই হিসেব মতো রাজ্য সরকারকে ৩৪৫৮ টি শূন্যপদের মধ্যে ১৭২৯টি পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে থেকেই পূরণ করতে হবে।
চাকরী প্রার্থীদের স্বস্তি ও ভবিষ্যৎ নিয়োগ প্রক্রিয়া:
মামলাকারীদের আইনজীবীদের মতে, এই রায়ের মধ্যে দিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দীর্ঘদিনের চাকরির দাবির প্রতি সুবিচার করা হলো। রাজ্য সরকার যদি দ্রুতই এই নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে অতি শীঘ্রই ১৭০০ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
আর এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এতদিন ধরে চলা চাকরির জটিলতার সমাধানে প্রার্থীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো এটাই যে, রাজ্য সরকার কত দ্রুত এই রায়ের ভিত্তিতে কাজ শুরু করবেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অধিকারকে সুরক্ষিত করে।